জামায়াতকর্মীদের দেয়া আগুন থেকে নিজের জমানো সব টাকা দিয়ে কেনা টমটম গাড়ি বাঁচাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন চালক মোহাম্মদ মুসা।
সোমবার হরতালের সকালে নগরীর বহদ্দারহাটে মুসার টমটমটিতে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়া হয়। ওই হরতাল ডেকেছিল জামায়াতে ইসলামী।মুসার স্বজনরা জানিয়েছেন, গাড়িটি বাঁচানোর চেষ্টা করলে পিকেটিংরত জামায়াতকর্মীরা তার শরীরেও পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়।
আগুনে মুসার শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে এখন চিকিৎসাধীন মুসা (২৫)।
মুসার চাচা ফজল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দুই ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে সবার বড় এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি মুসা।
তিনি জানান, পরিবারের অভাব অনটনে হরতাল উপেক্ষা করে প্রতিদিনের মতো সকালে টমটম গাড়িটি নিয়ে যাত্রী আনা নেয়া করছিল।
“হরতালকারীরা সকাল ৯টার দিকে টমটমটিতে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়ার সময় যাত্রীরা নেমে গেলেও পালিয়ে না গিয়ে মুসা গাড়িটি বাঁচাতে আগুন না দেয়ার অনুনয় করছিল।”
“এতে তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে হরতালকারীরা পেট্রোল ঢেলে টমটম এবং মুসার শরীরে আগুন দেয়।”
আগুনে গাড়িটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, মুসার মা সখিনা বেগম হাসপাতালে ছেলের অগ্নিদগ্ধ দেহের পাশে বসে কাঁদছেন।
ছেলের শরীরে আগুন দেয়া জামায়াতকর্মীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিও জানান তিনি।
চমেক হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে আইসিইউ না থাকায় চিকিৎসকদের পরামর্শে মুসাকে উন্নত চিকিৎসা দিতে ঢাকা নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।
মুসার বৃদ্ধ বাবা আব্দুল মুনাফ স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের নিয়ে নগরীর বাকলিয়া থানার পূর্ব বাকলিয়ার ওয়াজীপাড়ায় থাকেন।
দলের চট্টগ্রাম নগর কমিটির নায়েবে আমির শাহজাহান চৌধুরীর ভাগ্নে ও ছাত্রশিবিরকর্মী মাঈনুদ্দীন হাসান মুন্নার মৃত্যুতে সোমবার বৃহত্তর চট্টগ্রামে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকে জামায়াতে ইসলামী।
সারাদিন হরতাল চলাকালে জামায়াতকর্মীরা বিভিন্ন স্থানে গাড়িতে আগুন, বিক্ষিপ্ত মিছিল এবং হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নগরীর বিভিন্ন স্থাতে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চালায় বলে পুলিশ জানিয়েছে।